গাইবান্ধার ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গন কবলিত সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের দুস্থ অসহায় পরিবারের ২০ জন নারী পেলেন সেলাই মেশিন। সীমাহীন দারিদ্রের সাথে যুদ্ধ করে টিকে থাকা এই নারীদের বিষন্নমুখে ফুটল হাসির ঝিলিক।
তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় পূর্ব বাটিকামারীর চরের শাহনাজ বেগম বললেন, ‘বান-বন্যা, নদী ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারিয়েছি। স্বামী মো. নাজমুল হোসেন অবস্থাপন্ন মানুষের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করেন। চাষের খরচ, মালিককে ফসলের ভাগ দেওয়ার পর বড়জোড় তিন চার মাসের খোরাকি জোটে। তারপর স্বামী স্ত্রী গায়ে খেটে চার ছেলে মেয়েসহ ৬ জনের সংসার টানেন। বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর উপহার হিসেবে পাওয়া এই সেলাই মেশিনটি বাড়তি আয়ের সুযোগ করে দিল।’
রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে বসুন্ধরা শুভ সংঘ আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক একেএম হেদায়েতুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামী গাইবান্ধা জেলা আমীর মো, আ.করিম সরকার, জেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক মাহামুদুন্নবী টিটুল, জেলা যুবদল সভাপতি রাগিব হাসান চৌধুরী, ইসলামী ছাত্র শিবিরের জেলা সভাপতি ফেরদৌস সরকার রুম্মান, গাইবান্ধা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিসুজ্জামান মোনা ও যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ রোকনুজ্জামান। এ সময় শুভসংঘের জেলা কমিটির সভাপতি হুমায়ুন আহমদ বিপ্লব ও সাধারণ সম্পাদক শাহনাজ বেগমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কালের কন্ঠের জেলা প্রতিনিধি অমিতাভ দাশ হিমুনের সঞ্চালনায় সূচনা বক্তব্যে শুভসংঘের কেন্দ্রীয় পরিচালক জাকারিয়া জামান জানান,‘গত তিন বছর থেকে দেশের বিভিন্ন দারিদ্রপীড়িত এলাকা থেকে অস্বচ্ছল নারীদের খুঁজে বের করে বিনামূল্যে প্রশিক্ষন দিয়ে দক্ষ করে তোলা হচ্ছে। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হয় সেলাই মেশিন। সেই ধারাবাহিকতায় চার মাসের প্রশিক্ষণ সফলভাবে শেষ করে কামারজানির নারীরা পেলেন একটি করে সেলাই মেশিন। এখন জীবনযুদ্ধে পরিবারকে সাহায্য করবেন তারা। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া । প্রতিমাসে অন্তত তিনটি করে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সাফল্যের সাথে প্রশিক্ষন শেষ করা নারীরা পাচ্ছেন সেলাই মেশিন।’
তিনি আরও বলেন,‘শুধু নারীদের জন্য নয়, বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় সারা দেশে শুভসংঘ স্কুল নামে ২২টি স্কুল স্থাপন করা হয়েছে। অর্থের অভাবে ঝরে পড়া শিশুরা সেই স্কুলে বিনা মূল্যে লেখা পড়া করছে।তাদের স্কুল ব্যাগ, পোশাক, জুতো মোজাও দেওয়া হচ্ছে। বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্দেশ্য এইসব শিশুরা শিক্ষিত হয়ে যেন জীবনের মূল ধারায় আসতে পারে।’
বসুন্ধরা গ্রুপ ও শুভ সংঘের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এ কে এম হেদায়েতুল ইসলাম বলেন,’গাইবান্ধা দেশের দারিদ্রপীড়িত এলাকার একটি। এখানে নদনদীর ভাঙ্গণসহ নানা প্রাকৃতিক দূর্যোগে বিশেষ করে নারী ও শিশুরা বিপর্যস্ত। একজন নারী স্বাবলম্বী হলে সেই পরিবারের সন্তানরা সুশিক্ষার আলোয় উদ্ভাসিত হতে পারে। দরিদ্র পরিবারগুলোতে অশান্তি ও দূর্ভোগ দূর হয়। তারা সুন্দর জীবনের স্বপ্ দেখতে পারেন। সেলাই প্রশিক্ষন দুস্থ নারীদের স্বাবলম্বিতার পথে একটি আলোকবর্তিকা হতে পারে।’
জেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক মাহামুদুন্নবী টিটুল জানালেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপের এই কার্যক্রম গাইবান্ধার মত পিছিয়ে পড়া জেলাকে উন্নয়নের ধারায় যুক্ত করবে। তিনি বলেন, যে কোন ভাল ও মহৎ কাজে যুক্ত থাকতে পারা আনন্দের বিষয়। এই কর্মকান্ড সমাজের বিত্তবানদের নিশ্চয়ই মানুষের কল্যানে কাজ করার প্রেরণা যোগাবে।
মেশিন উপহার পেয়ে কামারজানির গোঘাট মাঝি পাড়ার গৃহবধু স্বরস্বতী দাস আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েন। তার চোখে অশ্রুবিন্দু থাকলেও কন্ঠে ছিল উচ্ছাস। বললেন, স্বামী হৃদয় চন্দ্র দাস পেশায় মৎস্যজীবি। এই সময়ে নদীতে মাছ কমে যাওয়ায় আয় অনেক কম। তাদের এক মেয়েসহ তিনজনের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। শুভসংঘের প্রশিক্ষণ গ্রহনের পর এখন তিনি সব ধরণের পোশাক তৈরী করতে পারেন। সেলাই মেশিনটি তার অনেক সাধনার প্রাপ্তি। এখনবাড়ির কাজের পাশাপাশি পোশাক তৈরী করেও আয় করতে পারবেন।
SOURCE : The Financial Expressশায়েস্তাগঞ্জে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মাঝে বসুন্ধরা শুভসংঘের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Distributed Food Items Among Underprivileged People in Shayestaganj
আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা ‘কুরআনের নূর- পাওয়ার্ড বাই বসুন্ধরা’ আসরের সমাপনী
"Qur'an-er Noor - Powered by Bashundhara" Int'l Hifzul Qur'an Competition Closing Ceremony is Held
সৈয়দপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের সেলাই মেশিন পেলেন অসচ্ছল ২০ নারী
20 Poor Women in Syedpur Receive Sewing Machines from Bashundhara Shuvosangho
Bashundhara Group's Assistance Became a Means of Survival for 20 Women
বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তা বেঁচে থাকার অবলম্বন পেলেন ২০ নারী
গোবিন্দগঞ্জে বসুন্ধরা শুভসংঘের ইফতারসামগ্রী বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Distributes Iftar in Gobindaganj