All news

অসচ্ছল নারীদের স্বাবলম্বী করার অনন্য উদাহরণ

বসুন্ধরা গ্রুপ  অসচ্ছল নারীদের স্বাবলম্বী করার অনন্য উদাহরণ

সময় বদলেছে, বদলেছে অনেক নারীর জীবনের গল্প। একসময় দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার মাকড়াই গ্রামের নারীরা ছিলেন অবহেলিত, দারিদ্র্যের শৃঙ্খলে বন্দি। সংসারের গণ্ডির বাইরে স্বপ্ন দেখার সাহসটুকুও ছিল না তাঁদের। কিন্তু এখন সেই চিত্র বদলেছে। বসুন্ধরা গ্রুপের দেশসেরা বৃহত্তম সামাজিক সংগঠন বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে সেই গ্রাম এখন নারীর ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান সারা দেশে বিধবা, অসচ্ছল, স্বামী পরিত্যক্তা ও দরিদ্র পরিবারের নারীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে বিনা মূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। তাঁর নির্দেশে ও কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদের হাতে বিনা মূল্যে সেলাই মেশিন তুলে দিচ্ছে বসুন্ধরা শুভসংঘ। সম্প্রতি বীরগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে বিনা মূল্যে সেলাই মেশিন বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বীরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মাসুদুল হক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে এলাহী, বীরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল গফুর, বীরগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি আমিরুল বাহার, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন ধলু, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দিনাজপুর জেলা সহসভাপতি রাশেদুন্নবী বাবু, উপজেলা জামায়াতের আমির ক্বারী আজিজুর রহমান ও বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান। বক্তারা বলেন, গ্রামীণ অসচ্ছল নারীদের স্বাবলম্বী করতে বসুন্ধরা গ্রুপের এই উদ্যোগ সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে। বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার এই প্রয়াস সত্যি প্রশংসনীয়। জাকারিয়া জামান বলেন, ‘গ্রামীণ নারীদের স্বাবলম্বী করার এই উদ্যোগ সুফল পেতে শুরু করেছে।

বিভিন্ন দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ। বসুন্ধরা শুভসংঘ সব সময় দায়বদ্ধতার কথা ভেবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়। আমাদের এই কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।’ আগেরবার সেলাই মেশিন পাওয়া শরিফা বেগম বলেন, ‘বসুন্ধরা শুভসংঘ শুধু সেলাইয়ের কাজ শেখায়নি, আমাদের স্বপ্ন দেখার সাহসও দিয়েছে। আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর সংসারে দারিদ্র্য নেমে আসে।

কিন্তু এখন আমি মাসে সাত-আট হাজার টাকা আয় করি। আমার সন্তানদের ভালোভাবে পড়াশোনা করাতে পারছি।’ স্বামী পরিত্যক্তা মনিকা মুরমু বলেন, ‘স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর বাবার বাড়ি চলে আসি। বাবাও গরিব ছিলেন, মাঝে মাঝে দিনমজুরি করতাম। কিন্তু সেই আয় সংসার চালানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। বসুন্ধরার সেলাই মেশিন পেয়ে আমি এখন ঘরে বসেই আয় করছি। সংসার ভালোই চলছে, বসুন্ধরার কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ।’ বীরগঞ্জ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মুক্তার হোসেন বলেন, বসুন্ধরা শুভসংঘ ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাকড়াই সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিয়ে নারীরা আত্মনির্ভরশীল হচ্ছেন, পরিবারের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তিতে পরিণত হচ্ছেন। এ ছাড়া বসুন্ধরা শুভসংঘ দরিদ্র শিশুদের বিনা মূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করছে। শিশুদের জন্য বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলে বিনা মূল্যে শিক্ষা ও শিক্ষা উপকরণ, ড্রেস, স্কুলব্যাগ, খাতা-কলম সরবরাহ করা হয়, যা সত্যি প্রশংসার যোগ্য। বসুন্ধরা গ্রুপ শুধু একটি ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান নয়, এটি মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাদের উদ্যোগ অসচ্ছল নারীদের জীবন বদলে দিচ্ছে, তাঁদের স্বপ্নপূরণের পথ দেখাচ্ছে। তাদের মহৎ উদ্যোগ আরো বহু নারীর জীবনে আলো ছড়াবে, তাঁদের স্বাবলম্বী হওয়ার পথে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।

SOURCE : কালের কণ্ঠ