জুয়েলারি শিল্পে বিশ্বজোড়া নামডাক ভারতীয় ডিজাইনের। কারিগরির দিক থেকে শোনা যায় বাংলাদেশের নাম। দুই দেশের এই খ্যাতি এক সুতায় গেঁথে স্বর্ণশিল্পে দক্ষিণ এশিয়ার বাঘ হতে চায় বাংলাদেশ ও ভারত। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি প্রাচ্যের মুক্তা নামে পরিচিত ভারতের অঙ্গরাজ্য গোয়ায় হয়ে গেল জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সম্মেলন। সোনার গয়না উৎপাদন ও রপ্তানিতে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার খুলতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সম্মত হন দুই দেশের ব্যবসায়ীরা।
গত ২৮-২৯ জুন গোয়া রাজ্যের রাজধানী পানাজিতে হোটেল দ্য লিলায় অনুষ্ঠিত প্রথম বিটুবি শীর্ষ সম্মেলনে যৌথ প্রচেষ্টার ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতীয় সংস্থা কেএনসি সার্ভিসেস আয়োজিত জুয়েলারি এক্সপোতে অংশ নেয় বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। দুই দিনব্যাপী সামিটে বাংলাদেশ ও ভারতের দুই শতাধিক শীর্ষ জুয়েলারি ব্যবসায়ী অংশ নেন। সম্মেলনে ভারতীয় বিশ্বখ্যাত জুয়েলারি ডিজাইনগুলো প্রদর্শন করা হয়। আন্তর্জাতিকভাবে স্বনামধন্য ৩৫টি ভারতীয় জুয়েলারি হাউস বিখ্যাত ঐতিহ্যবাহী ব্র্যান্ড, উদীয়মান ডিজাইন প্রতিভা এবং সারা দেশের সেরা খুচরা বিক্রেতাদের বিলাসবহুল গয়না প্রদর্শন করা হয় সম্মেলনে।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর। বাজুস সভাপতি উপমহাদেশ থেকে বিশ্বের অন্যান্য অংশে স্বর্ণ রপ্তানি প্রচারে দ্বিপক্ষীয় সহায়তা নিয়ে আলোচনা করতে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্তের সঙ্গেও দেখা করেন। তরুণ ব্যবসায়ী নেতা স্বর্ণ উৎপাদন শিল্পে সহায়তার পাশাপাশি পর্যটন ও চিকিৎসাসেবায় সহযোগিতার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ঢাকায় আমন্ত্রণ জানান। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত বলেন, গোয়া প্রধানত পর্যটনশিল্পে উন্নতি লাভ করলেও জুয়েলারি শিল্পে নতুন দিক উন্মোচনের জন্য আমাদের পর্যাপ্ত সম্পদ রয়েছে। স্বর্ণ ব্যবসায় দুই দেশের এই মিলনমেলাকে ইতিবাচক কর্মকান্ড হিসেবে দেখছেন বলে জানান তিনি।
শীর্ষ সম্মেলনের জন্য গোয়াকে বেছে নেওয়ায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান তিনি। সায়েম সোবহান আনভীরের সঙ্গে অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসায়িক সম্ভাবনা এবং নতুন উদ্যোগ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার জন্য আলোচনা চালিয়ে যেতে চান বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। দুই দেশের স্বর্ণশিল্পকে একযোগে এগিয়ে নিতে উদ্যোগ গ্রহণ করায় বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরকে ধন্যবাদ জানান গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী।
এর আগে ২৮ জুন সকাল ১০টায় ফিতা কেটে ও প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে বর্ণাঢ্য এ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর। পৃথিবীর বুকে দক্ষিণ এশিয়ার জুয়েলারি শিল্পকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করে বক্তব্য দেন তিনি। জুয়েলারি শিল্পে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, যৌথ উদ্যোগ, মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, পারস্পরিক সুবিধার জন্য বর্তমান সময়ে আরও শক্তিশালী সহযোগিতা গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের উচিত ইতিহাসের এই ইতিবাচক উত্তরাধিকার গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের নেতৃত্ব ও জনগণের উন্নয়নের যাত্রায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আছি।’ ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমরা ভারতের অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছি। সেই থেকে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার প্রতিটি ধাপে ভারত আমাদের সমর্থন জুগিয়ে আসছে। সেই ধারা সামনেও অব্যাহত থাকুক।’
তিনি আরও বলেন, ভারতের উচিত অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা আরও বৃদ্ধি করা এবং দেশের সমৃদ্ধিতে সহায়তা করা। আসুন আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির নতুন অধ্যায় লিখতে বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বের মনোভাব নিয়ে কাজ করি।
ভারতের ব্যবসায়ীরা বলেন, যদিও গোয়া মূলত পর্যটনে সমৃদ্ধ। তবে স্বর্ণশিল্পের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা জুয়েলারি বিজনেস সামিটের এমন একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান এবং আশা করেন যে, দুই দেশ একসঙ্গে জুয়েলারি শিল্পকে বিশ্ববাজারে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে যাবে।
অন্যদিকে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা বলেছেন, দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে জুয়েলারি ব্যবসার শীর্ষ সম্মেলন বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন যুগের সূচনা করবে। এই শীর্ষ সম্মেলন ব্যবসায়িক সম্পর্ককে আরও বাড়িয়ে তুলবে এবং সহযোগিতার আরেকটি দুয়ার খোলার মাধ্যমে উভয় দেশ অত্যন্ত উপকৃত হবে।
আয়োজকদের মতে, ব্যবসায়িক শীর্ষ সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল উভয় দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে একত্র করা। সামিট সম্পর্কে কথা বলার সময় কেএনসি সার্ভিসেসের প্রতিষ্ঠাতা সিইও ক্রান্তি নাগভেকার বলেন, সোনার বাংলা সামিট হলো স্বর্ণশিল্প ও অন্যান্য খাতে সহযোগিতার সম্প্রসারণের জন্য একটি দেশ বিশেষ ব্যবসায়িক ফোরাম। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবাই জানি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর একজন দূরদর্শী ব্যবসায়ী নেতা। ব্যবসায় সহায়তার জন্য তিনি ভারত-বাংলা সম্পর্কে আরও সহযোগিতা চান। এরই মধ্যে কয়েকটি ব্যবসায়িক মিটিং হয়েছে, যেখানে ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে স্বর্ণ উৎপাদনে সহায়তা করার প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন।’
সামিটে দুই দেশের ভাতৃত্ব জোরদার করা, পণ্য প্রদর্শন, ডিজাইনের ওপর ধারণা শেয়ার করা, জুয়েলারি আইটেম রপ্তানির সুযোগ, বাংলাদেশে যৌথ উদ্যোগে জুয়েলারি শিল্প স্থাপনের বিষয়ও ছিল। প্রথমবার আয়োজিত এ সম্মেলনে স্বর্ণশিল্পের সম্ভার ও আকর্ষণীয় ডিজাইন নজর কেড়েছে সবার। এ ধরনের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ধারণা করা হচ্ছে, বাজুস সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের ব্যবসায়িক প্রজ্ঞা, সৃষ্টিশীলতা ও দূরদর্শিতায় ভবিষ্যতে বাংলাদেশ এবং ভারতের জুয়েলারি শিল্প আরও সমৃদ্ধ হবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।
SOURCE : বাংলাদেশ প্রতিদিনপাবিপ্রবির কর্মচারীদের মাঝে বসুন্ধরা শুভসংঘের ইফতার বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Distributes Iftar Among Pabiprabi Employees
সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সঙ্গে বসুন্ধরা শুভসংঘের ইফতার আয়োজন
Bashundhara Shuvosangho Organised an Iftar Programme for Underprivileged People
সুবিধাবঞ্চিত মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে বসুন্ধরা শুভসংঘ
Bashundhara Shuvosangho Gives Food Assistance to Underprivileged Madrasha Students
মনোহরদীতে বসুন্ধরা শুভসংঘের ইফতার সামগ্রী বিতরণ
Bashundhara Shuvosangho Distributes Iftar Items in Monohardi of Narsingdi
বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণ আরও ২৪৯ জনকে
249 More Women get Interest-Free Loans from Bashundhara Foundation