অভাব-অনটনের সংসার। মানসিক রোগে ভুগছেন স্বামী। স্বামীর চিকিৎসা আর এক কন্যা সন্তানের ভরণ-পোষণের দায় পড়েছে ফরিদা বেগমের (১৮) ওপর। সেই ভরণ-পোষণ জুটাতে নিজেও হয়েছেন রোগাক্রান্ত।
এ অবস্থায় আয় রোজগারের কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি। বসুন্ধরা গ্রুপ খুলে দিয়েছে তার কর্মসংস্থানের পথ। বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে ৩ মাস সেলাই প্রশিক্ষণের পর তাকে প্রদান করা হয়েছে সেলাই মেশিন।
শনিবার (১৫ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার আলহাজ মোবারক হোসেন অনির্বাণ উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে শুধু ফরিদাই নয়, তার মতো ২০ জন অসহায় নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রদান করা হয় একটি করে সেলাই মেশিন।
ফরিদা বেগমের (১৮) বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়নের চার আনি গ্রামে। বুড়িতিস্তা নদীবেষ্টিত ওই গ্রামটিতে তার বাড়ির অবস্থান একটি নিভৃত চরে। মাত্র ১১ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল তার।
এক বছর পর ঘরে আসে আলো মনি নামের এক কন্যা সন্তান। স্বামী আকরাম হোসেনের রডমিস্ত্রির কাজের আয়ে ভাবতে শুরু করেন আলো মনিকে নিয়ে সংসারের দেখবেন অনেক সুখের আলো। কিন্তু স্বামীর মানসিক অসুস্থতা সংসারে টেনে আনে আলোর বদলে অন্ধকার।
সেলাই মেশিন পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে ফরিদা বলেন,‘মনে করিছিনু জীবনটা মোর এইটে (এই পর্যন্ত) শ্যাষ। কিন্তু বসুন্ধরার সেলাই মেশিন পায়া এলা নতুন করি বাঁচিবার স্বপন জাগি উঠিল।
এলা কাপড় সেলাইয়ের কামাই দিয়া কোন মতন করি বাঁচিবার পারিমো। টাকার অভাবত স্বামীর চিকিৎসা হোছেনা, সেইটাও জুটিবার পারিম’।
তার মত আরেক নারী মুক্তা বেগম। এখন বয়স ১৮ হলেও সাত বছর আগে বিয়ে হয়েছিল তার। জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়নের ঘাটের পাড় নামক চর গ্রামে বাড়ি তার। প্রেমের সম্পর্ক ধরে প্রতিবেশী আপন শাহের সঙ্গে হয়েছিল বিয়ে। পরিবারের অমতে বিয়ে করায় যেমন বিতাড়িত হন বাবার বাড়ি থেকে। তেমনি শ্বশুর বাড়িতেও ঠাঁই মিলেনি তার। অগ্যতা নদীর বাধের জমিতে কুড়ে ঘর তুলে শুরু করে বসবান। স্বামীর দিনমজুরীর সামান্য আয়ে শুরু করেন জীবনের পথচলা। এরই মধ্যে পরিবারে আসে মাহিম (৬) নামে এক ছেলে সন্তান। তিনিও সেলাই মেশিন পেয়ে আনন্দিত।
মুক্তা বেগম বলেন,‘সেলাই মেশিন হাতোত পায়া বাঁচি থাকবার পথ খুঁজি পানু। সংসারোত খুব অভাব। স্বামী যেইদিন কাজ পায় সেইদিন খাবার জুটে। না হইলে অর্ধাহার অনাহারে দিন কাটে।
ওই অনুষ্ঠানে সেলাই মেশিন পাওয়া নারীরা সকলেই অসচ্ছল পরিবারের। তাদের বেশিরভাগের বাড়ি বুড়ি তিস্তা নদীর বাঁধের জমিতে। চর গ্রাম হওয়ায় অনুন্নত যোগাযোগ ব্যস্থায় পিছিয়ে পড়ে এসব পরিবারের জীবন-জীবিকা। শিক্ষা থেকে বঞ্চিত তাদের শিশুরা। শিশুদের শিক্ষা সহযোগিতায় গ্রামে বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুল স্থাপন করেছে বসুন্ধরা গ্রুপ। এখন এসব পরিবারের নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রদান করা হয়েছে সেলাই মেশিন। পরিবারের সচ্ছলতা বাড়ার পাশাপাশি লেখাপড়ার গতি বাড়বে শিশুদের।
সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে কালের কণ্ঠের নীলফামারী প্রতিনিধি ভুবন রায় নিখিলের সভাপতিত্বে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তৃতা দেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান, উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কৃষ্ণা কাবেরী, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মো. কামরুজ্জামান, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও আলহাজ মোবারক হোসেন অনির্বাণ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ্ রোকনুজ্জামান চৌধুরী রোকন, প্রভাষক আব্দুল্লাহ আল মামুন, বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তা মো. মামুন, শুভসংঘের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ইয়াছির আরাফাত রাফি, সদস্য ফরিদ মিয়া, আমিনুর রহমান, মো. গোলাম হোসেন, নিউজ ২৪-এর জেলা প্রতিনিধি আব্দুর রশীদ শাহ, কালের কণ্ঠের জলঢাকা প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান স্টালিন প্রমুখ।
SOURCE : কালের কণ্ঠবসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণে স্বাবলম্বী ২৯ হাজার পরিবার
Bashundhara Foundation’s Interest-Free Loans Empower 29,000 Families to Become Self-Reliant
দুর্গাপুরে এতিম ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করল বসুন্ধরা শুভসংঘ
Bashundhara Shuvosangho Distributes Educational Materials Among Orphans and Underprivileged Students in Durgapur
বাঞ্ছারামপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে ৬০ নারীকে সেলাই মেশিন বিতরণ
60 Underprivileged Women Receive Sewing Machines in Bancharampur through Bashundhara Shuvosangho
নারায়ণগঞ্জে অসহায় বিধবা রামরতি রবিদাসের পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ
Bashundhara Shuvosangho Supports Struggling Widow Ramrati Rabidas in Narayanganj
বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে পাবনায় ১০০ নারী পেলেন সেলাই মেশিন
বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণে স্বাবলম্বী হাজারো পরিবার