১৯৮৭ সাল। ঢাকায় নিজের একটি বাড়ি গড়ার স্বপ্ন দেখাল বসুন্ধরা। বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান জনাব আহমেদ আকবর সোবহান ঢাকার আবাসিক সমস্যা সমাধানের জন্য বেসরকারিভাবে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, ঢাকার ওপর মানুষের চাপ বাড়বে।
মানুষের চাপ বাড়লেই আবাসন সংকট তৈরি হবে। তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে আবাসন ব্যবসা শুরু করলেন। শুরু থেকেই বসুন্ধরা জনগণের আস্থা অর্জন করে। বারিধারা কূটনৈতিক জোনের কাছেই এ, বি, সি ও ডি—এই চারটি ব্লক নিয়ে বসুন্ধরা যাত্রা শুরু করে।
তখন প্লট কিনে বাড়ি করার ধারণাটি ছিল নতুন। কথাটা তখন তেমন কেউ বিশ্বাস করতেন না। ধারণা নতুন হলেও যদি আস্থা অর্জন করা যায়, তাহলে জনগণ লুফে নেবে। হয়েছেও তাই।
বারিধারা কূটনৈতিক জোনটা ছিল সব দিক থেকে আকর্ষণীয়। কাছেই বিমানবন্দর। তাই নিজের একটি বাড়ি হবে এমন স্বপ্ন যাঁরা দেখতেন, তাঁরা তাঁদের সাধ্যের মধ্যে বসুন্ধরায় প্লট কেনা শুরু করলেন। নিজের জমির ওপর হবে স্বপ্নের বাড়ি। সেই বাড়িতে হবে বসবাস।
এই বিশ্বাসটা বসুন্ধরা মানুষের কাছ থেকে অর্জন করেছিল। সেই বিশ্বাসেই আজকে আমরা এত দূরে। ১৯৯৮ সালে আমরা পরিধি বাড়াতে থাকি। আজকে বসুন্ধরা একটি বিরাট পরিসর।
দেশে নয়, বিদেশেও
আমাদের স্লোগানই হলো ‘দেশ ও মানুষের কল্যাণে’। আমরা সব সময় মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করেছি। দেশের মানুষ আমাদের কথা আপনা থেকেই বলে। নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে বসুন্ধরায় প্লট কেনার জন্য প্রবাসীরা বিনিয়োগ শুরু করেন। প্রথম কিস্তি দেওয়ার পর তাঁরা নিজেরা এসে প্লট দেখতেন বা আত্মীয়-স্বজনদের দেখতে বলতেন। এরপর বাকি কিস্তি ধীরে ধীরে পরিশোধ করতেন। যেহেতু প্রবাসীদের কষ্টের টাকা, তাই আমাদের চেষ্টা থাকত সর্বোচ্চ।
২০০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে রিহ্যাবের উদ্যোগে আবাসন মেলা হলো। ৪০টির মতো আবাসন কম্পানি এতে অংশ নেয়। বসুন্ধরাও এতে অংশ নেয়। আমরা ভালো সাড়া পাই। প্রবাসীদের উৎসাহ আমাদের আরো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করল।
একটি সুন্দর পরিকল্পিত নগরী
অধিকাংশ আবাসন কম্পানি সাধারণত প্লট বিক্রি করেই দায়িত্ব শেষ করে। তাদের বেশি কোনো পরিকল্পনা থাকে না। এ ক্ষেত্রে আমরা শুরু থেকেই ভিন্ন। আমাদের চেয়ারম্যান মহোদয় হলেন একজন আধুনিক স্থপতি। তিনি বসুন্ধরাকে একটি পরিকল্পিত নগরী হিসেবে দেখতে চাইলেন। তাঁর নির্দেশনা মেনে বসুন্ধরা আজকের আধুনিক আবাসিক নগরী।
২০০১ সালে আমরা প্লটের পাশাপাশি ফ্ল্যাট বিক্রি শুরু করি, যাতে একজন ক্রেতার কোনো অসুবিধা না হয় সেই দিকে আমাদের খেয়াল সর্বোচ্চ।
প্লট বা ফ্ল্যাট কেনার পর সবারই একটি প্রশ্ন মাথায় আসে, তা হলো নিরাপদ কি না। সেই দিক থেকে আমরা বলতে পারি, আমাদের সুবিশাল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা শতভাগ নিরাপদ। নিজস্ব এক হাজার ৫০০ নিরাপত্তাকর্মী সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য রয়েছে সিসিটিভি ও সিকিউরিটি হেল্প লাইন।
আমরা শুরু করেছিলাম চারটি ব্লক নিয়ে, এখন আমাদের ব্লক সংখ্যা ১৬। মোট ১১ হাজার বিঘা জায়গা। এই বিশাল এলাকায় আমাদের নিজস্ব ২০০-২৫০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়মিত সকাল, বিকাল ও রাতে কাজ করেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিক পদ্ধতিও আছে আমাদের।
আছে ১০০-১৫০ জন অগ্নিনির্বাপককর্মী। সব ধরনের অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র আমাদের আছে। ছোট থেকে বড় যেকোনো দুর্ঘটনা আমাদের কর্মীরা সামাল দিতে পারেন।
আমরা যত্নবান
আমরা শুরু থেকেই সবুজ বনায়নের ওপর জোর দিয়েছি। সবুজে বাঁচুন—কথাটিকে বাস্তবায়ন করেছি। আমাদের এখানে আছে দেশের ব্যস্ততম করপোরেট প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ব্যাংক, কনভেনশন সেন্টার, সুপার শপ, রেস্টুরেন্ট, জিম, খেলার মাঠ ইত্যাদি যেমন বিশ্বমানের ইন্টারন্যাশনাল স্কুল-ঢাকা, প্লে-পেন স্কুল, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সানিডেল স্কুল, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়, আগা খান শিক্ষা কমপ্লেক্স, এ্যাপোলো হসপিটালস ও বসুন্ধরা আই হাসপাতাল, ব্যাংক-বীমাসহ নানা করপোরেট ও বাণিজ্যিক স্থাপনাও রয়েছে বসুন্ধরা আবাসিক প্রকল্পে। শুধু তাই নয়, বসুন্ধরায়ই রয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক মানের চারটি বিশাল কনভেনশন সেন্টার। ছোট থেকে বড় যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান করার জন্য আমাদের কনভেনশন সেন্টারগুলো আদর্শ।
আমাদের প্রকল্পসমূহ
বসুন্ধরার বারিধারা প্রকল্পের পরপরই দেশের আবাসিক সমস্যার কথা বিবেচনা করে বেশ কয়েকটি প্রকল্প আমরা হাতে নিয়েছি। পুরান ঢাকার মানুষদের আবাসন সুবিধা প্রদানের জন্য কেরানীগঞ্জে হাসনাবাদে আট হাজার একর জমিতে রিভারভিউ নামের প্রকল্প রয়েছে। গাজীপুরের মৌচাক ও স্কাউট জাম্বুরির কাছে রয়েছে মৌচাক হাউজিং প্রকল্প। ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ের পাশে রয়েছে রিভারভিউ গ্রিন টাউন ও বসুন্ধরা দক্ষিণা প্রকল্প। এ ছাড়া বসুন্ধরা বারিধারা ও রিভারভিউ প্রকল্পের প্রাইম লোকেশনে আছে আমাদের বিভিন্ন সাইজের অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্প।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও অনুলিখন : বিনয় দত্ত
বসুন্ধরা হাউজিং কোম্পানি সবার সেরা এবং আলাদা
আবাসন খাতে জনগণের সাড়া কেমন?
আবাসন খাত হলো সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত। এই খাতে সবাই এখন বিনিয়োগ করছেন। মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্ত সবাই নিজের একটা স্বপ্নের বাড়ি চান। সেই স্বপ্ন পূরণে আমরা কাজ করছি।
আমরা কাজ শুরু করেছিলাম রাজধানীর আবাসন সমস্যা দূরীকরণে। এই জায়গায় আমরা শতভাগ সফল। পুরো বসুন্ধরা আবাসিক প্রকল্পে জনগণের সাড়া দেখেই বোঝা যায় আমাদের ওপর সবার আস্থা কতখানি বেশি।
কেন বসুন্ধরায় ক্রেতারা প্লট বা ফ্ল্যাট কিনবেন?
বসুন্ধরা বারিধারা সম্পূর্ণ প্রকল্পই রাজউক অনুমোদিত, REHAB ও BLDA-এর সদস্য। আবাসন খাতে যতগুলো প্রতিষ্ঠান আছে তার মধ্যে আমরা হলাম আইডিয়াল। আদর্শিক জায়গা থেকে আমাদের সুনাম, আস্থা সবচেয়ে বেশি। কথা দিয়ে কথা রাখার নজির আমাদের রয়েছে। মানে নির্দিষ্ট সময়ে গ্রাহকদের প্লট বা ফ্ল্যাট হস্তান্তর করি আমরা। আমাদের কাছ থেকে ক্রেতাদের প্রতারিত হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। এ কারণেই ক্রেতারা বসুন্ধরায় প্লট বা ফ্ল্যাট কিনবেন।
বসুন্ধরা কেন আলাদা?
বসুন্ধরা হাউজিং কম্পানি কাজ করছে ১৯৮৭ সাল থেকে। দৃশ্যমান প্রকল্প হিসেবে সবাই এখন বারিধারা কূটনৈতিক জোনের কাছে বসুন্ধরা আবাসিক প্রকল্প দেখতে পারছে এবং এর সুবিধাও পাচ্ছে। এত বড় আধুনিক ও সফল প্রকল্প পুরো ঢাকা শহরেই নেই। তাই বসুন্ধরা হাউজিং কোম্পানি সবার সেরা এবং আলাদা।
মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে কি বসুন্ধরা আবাসিক প্রকল্প?
বসুন্ধরা বারিধারা প্রকল্পের পাশাপাশি ঢাকার আশপাশে বিভিন্ন প্রকল্প গড়ে তোলার কারণ, যাতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের সাধ্যের মধ্যে প্লট বা ফ্ল্যাট ক্রয় করতে পারে। যখন আমরা ফ্ল্যাট বিক্রি শুরু করি, তখন মাত্র এক হাজার ১০০ টাকায় আমরা প্রতি বর্গফুট বিক্রি শুরু করি। সেই সময় অন্যান্য আবাসন প্রতিষ্ঠান সবাই অবাক হয়ে যায়, এত কম টাকায় কিভাবে আমরা প্রতি বর্গফুট বিক্রি করছি। কারণ জমি ছিল আমাদের নিজস্ব, তাই আমরা মধ্যবিত্তদের সাধ্যের কথা মাথায় রেখে ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুট বিক্রি করেছিলাম।
ভবিষ্যতে পরিকল্পনা কী?
আমাদের একটাই আশা, সবাই যেন নিজের জমিতে বাড়ি করে থাকতে পারেন। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। সরকারের পাশাপাশি আমরাও আবাসনকে অনেক গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রেখে কাজ করছি। আগামীর ঢাকা অর্থাৎ ঢাকার সবচেয়ে বেশি সম্প্রসারিত জোন পূর্বাঞ্চলে ছোট-বড় বেশ কয়েকটি আবাসন প্রকল্প আমরা হাতে নিয়েছি। এতে রাজধানী ঢাকার আবাসন সমস্যা দ্রুতই লাঘব হবে।
SOURCE : কালের কণ্ঠবসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণে স্বাবলম্বী ২৯ হাজার পরিবার
Bashundhara Foundation’s Interest-Free Loans Empower 29,000 Families to Become Self-Reliant
দুর্গাপুরে এতিম ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করল বসুন্ধরা শুভসংঘ
Bashundhara Shuvosangho Distributes Educational Materials Among Orphans and Underprivileged Students in Durgapur
বাঞ্ছারামপুরে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে ৬০ নারীকে সেলাই মেশিন বিতরণ
60 Underprivileged Women Receive Sewing Machines in Bancharampur through Bashundhara Shuvosangho
নারায়ণগঞ্জে অসহায় বিধবা রামরতি রবিদাসের পাশে দাঁড়িয়েছে বসুন্ধরা শুভসংঘ
Bashundhara Shuvosangho Supports Struggling Widow Ramrati Rabidas in Narayanganj
বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে পাবনায় ১০০ নারী পেলেন সেলাই মেশিন
বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের সুদমুক্ত ঋণে স্বাবলম্বী হাজারো পরিবার